জিম কুইক একজন ব্রেইন কোচ। কীভাবে কোন কিছু কার্যকর ভাবে শেখা যায়, মনে রাখা যায়, এগুলি তিনি শেখান। কীভাবে কোন কিছু শিখতে হয় তা, সবচাইতে বড় স্কিল।
এই ফিটনেস বিষয়ক সাইটে ব্রেইন ও মেমোরি বিষয় লেখা কেন? কারণ এটি ফিটনেসের অংশ। বডি পুরাটাই একটা সিস্টেম। খালি মাসলওয়ালা লোক কিন্তু ব্রেইনলেস হলে অর্থাৎ ব্রেইনের দিক থেকে শার্প না হলে তা আগলি।
জিম কুইক একটা বই লিখেছেন লিমিটলেস নামে। সেখানে তিনি কীভাবে কার্যকর ভাবে শেখা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনটি প্রধান টিপস তিনি দিয়েছেন ব্রেইনের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য।
(##) “পারব না” এই মাইন্ডসেট দূর করা
এটি একেবারে কমন পরামর্শ। আমরা কবিতাতেই পড়েছি, পারিব না ও কথাটি বলিও না আর।
কোন জিনিস যদি আমরা বলি পারব না, তাহলে সেটি আমাদের মন তথা আনকনশাস বিশ্বাস করে ফেলে। ফলে ঐ জিনিস আমরা শিখতে পারি।
ব্রেইন ডাক্তার ড্যানিয়েল আমিন সহ আরো অনেক লার্নিং বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে একমত যে, প্রথমত আপনাকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে উৎপন্ন হওয়া “পারবো না” এর সাথে মোকাবেলা করতে পারবে।
এছাড়া, যেকোন কাজে মাইন্ডসেট হচ্ছে ভাইটাল জিনিস। সুকুমার রায়ের কাজের লোক ছড়াটি পড়তে পারেন।
(##) ব্রেইন ফুড খেতে হবে
কুইকের দ্বিতীয় পরামর্শ এটি।
আপনি যা খান, আপনি তাই হোন। মানুষ হলো একটা সিস্টেম তাই তার খাদ্য তার চিন্তায় ও মানসিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কুইক বলেন দিনে একবার হলেও ব্রেইন ফুড খেতে। এগুলি গ্রে সেলকে শক্তিশালী করবে। ব্রেইনের বাইরের দিকের স্তর যেটি দ্বারা গঠিত, এবং এটি মাসল নিয়ন্ত্রণ, অনুভূতি, সিদ্ধান্ত নেয়া, দেখা, শোনা, কথাবলা ইত্যাদিতে নিয়োজিত থাকে।
এই ব্রেইন ফুডগুলি কী কী?
১। আভোকাডো – এর ফ্যাট স্বাস্থ্যকর। এর নন স্যাচুরেটেড ফ্যাট হেলদি ব্লাড ফ্লোতে সাহায্য করে।
২। ব্লু বেরী – ব্রেইনকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। ব্রেইন এজিং থেকে রক্ষা করে।
৩। ব্রকোলি – এতে ভিটামিন কে থাকে যা চিন্তার ক্ষমতা বাড়ায়, স্মৃতি বাড়ায়।
৪। ডিম – স্মৃতি বাড়ানো এবং ব্রেইন বুস্টিং এর জন্য প্রয়োজনী কোলাইন এর মধ্যে আছে। এটি চিন্তার ক্ষমতা ও স্মৃতি বাড়ায়।
৫। সবুজ পাতাওয়ালা শাক সব্জী – ভিটামিন ই থাকে যা এজিং এর প্রভাব থেকে ব্রেইনকে বাঁচায়।
৬। সারডিন, সালমন এবং ক্যাভিন – অমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকে এগুলিতে, যা এজিং থেকে ব্রেইনকে বাঁচায়।
৭। হলুদ – হজমে সাহায্য করে, এন্টি অক্সিডেন্ট বুস্ট করে এবং ব্রেইনের অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা বাড়ায়।
৮। ওয়ালনাটস – ভিটামিন ই এবং এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা এজিং থেকে ব্রেইনকে বাঁচায়।
৯। কালো চকলেট – ককোয়াতে ফ্লেভোয়েডস থাকে যা চিন্তার ক্ষমতা বাড়ায়।
১০। পানি – ডি-হাইড্রেশন ব্রেইনের চিন্তার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ব্রেইন টেস্টে দেখা গেছে হাইড্রেটেড লোকেরা ভালো করেন। আমাদের ৮০ ভাগই পানি, এবং পানি পান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এইসবগুলা উপকারীতা কুইকের কথায়।
(##) পড়ার ক্ষমতাকে কাজে লাগান
জিম কুইক বলেন, লার্নিং এর জন্য পড়া অপরিহার্য। এটি ব্রেইনের জন্য এক অসাধারণ ব্যায়াম।
পড়ার জন্য কনসিসটেন্সি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ নিয়মিত ভাবে বছর বছর ধরে পড়ে যেতে হবে। তখন ব্রেইন পড়া থেকে বেস্ট আউটকাম নিতে শিখবে। এবং জ্ঞান কম্পাউন্ড হয়ে বেড়ে যাবে।
বই পড়া ব্রেইনের উপর কী পড়োভাব ফেলে এ নিয়ে বিস্তারিত বই পড়ে লাভ কী লেখাটি পড়তে পারেন।
উপসংহারঃ
জিম কুইকের পরামর্শের পরে, এই লেখাতে একটা উপসংহার যোগ করি।
কুইক যেসব খাদ্যের কথা বলেছেন, এর কিছু বাংলাদেশে অপ্রচলিত বা কম প্রচলিত হতে পারে। এবং বাংলাদেশের সমাজে প্রচলিত আরো অনেক ব্রেইন ফুড থাকতে পারে। এগুলি খুঁজে দেখতে হবে।
মেমোরি বাড়ানোর নানা টেকনিক আছে, যেমন মেমোরি প্যালেস। পড়া থেকে সবচাইতে বেশি নেয়ারও নানা পদ্বতি রয়েছে, এগুলিও আয়ত্ত্ব করার চেষ্টা চালাতে হবে। লাইফলং লার্নিং একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মানুষের জন্য।