আমাদের লোকজনদের মধ্যে ডায়বেটিস রোগ হবার প্রবণতা বেশি। জেনারেল পপুলেশনদের চাইতে ৬ গুণ বেশি।
ডাক্তার মুবিন সৈয়দ, সাউথ এশিয়ান হেলথ নিয়ে কাজ করেন। তার মত হলো, এই অঞ্চলে পরপর অনেক বড় বড় দূর্ভিক্ষ হয়েছে। যেখানে একটা দূর্ভিক্ষ হলে পরের জেনারেশনে দূর্ভিক্ষ না থাকলেও
১। ডায়বেটিস ও অবিসিটির সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়,
২। নাতি নাতনি জেনারেশনে হৃদরোগের সম্ভাবনা ২.৭ গুণ বেড়ে যায়,
সেখানে ১৮ এবং ১৯ শতকে এই সাউথ এশিয়া অঞ্চলে হয়েছে ৩১ টি বড় দূর্ভিক্ষ।
এই দূর্ভিক্ষের কারণে বডি দূর্ভিক্ষের বা ক্ষুধায় টিকে থাকার জন্য এডাপ্ট হয়েছে, তাই ফ্যাট জমিয়ে রাখে, সহজে বার্ন করে না। উপরে ফ্যাট কম, কিন্তু ঠিকই ভুঁড়ি হয়ে যায়।
১৯৪৭ সালের আগের দুইশ বছরে ৩১ টি পরপর বড় দূর্ভিক্ষের কারণে, এই অঞ্চলের মানুষদের হৃদরোগ ও ডায়বেটিসের হার অন্যান্য এথনিসিটির লোকদের চাইতে বেশি, বলে ডাক্তার মুবিনের মত।
ব্রিটিশ কলোনিয়াল শাসনের কূ প্রভাব এখনো আপনার আমার হয়ত বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। আর তার সুফল এখনো পাচ্ছে শাসকদের উত্তরপুরুষেরা লন্ডনে।
অনলাইনে একজনের গল্প পাইলাম। তিনি তার প্রফেসররে নিয়া লেখছেন। তার প্রফেসর ছিলেন বাঙালী। প্রফেসর ভদ্রলোক বলছিলেন, তার দাদা ব্রিটিশ পিরিয়ডে দূর্ভিক্ষের সময় টিকেছিলেন। ওইসময় রাস্তাঘাটে কঙ্কালসার মানুষ, না খাইয়া মরতেছে, ভিক্ষা করতেছে কিন্তু এলিটেরা ঠিকই পার্টি করা থামায় নাই। এরপর তো অনেকদিন পার হইছে, ব্রিটিশ গেছে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হইল, কিন্তু তার দাদা সব সময় পকেটে ব্রেড রাখতেন। তার ভেতরে একটা ভয় ঢুকে গেছিল, হয়ত এমন কোন পরিস্থিতিতে পড়বেন যে খাবার পাবেন না। বেশিক্ষণ খাবার এর দেখা নাই এমন জায়গায় থাকতে পারতেন না। প্রফেসরও ছোটবেলা থেকে ক্লাসে গেলে একটা কমলা নিয়া যাইতেন প্রতিদিন। অনেক পরে, বড় হইয়া তিনি বুঝলেন এইটা আসলে কোথা থেকে পাইছেন।
এই পরিস্থিতিতে, ইতিহাসে গিয়ে সময় আর বদলানো যাবে না। বরং চেষ্টা করতে পারেন, ডায়েট ও এক্সারসাইজের। যেহেতু শাদা আমেরিকান ফাস্ট ফুড খাইয়া চললে, এবং আপনে একইরূপ খাইয়া চললে, আপনি ৬ গুণ বেশি রিস্কে থাকেন ডায়বেটিসের, ফলে আপনার ৬ গুণ বেশি সতর্ক থাকা উচিত।
মুভমেন্ট, এক্টিভিটি বাড়ানোর, শাদা চাল বাদ দিয়ে ব্রাউন বা সিদ্ধ চাল খাওয়া, ময়দা বাদ দেয়া, সুগার বাদ দেয়া বা কমানো, ভেজিটেবলসে ফোকাস, ইত্যাদি খেয়াল করতে পারেন।
বয়স ৩৫ এর বেশি হইলে আপনার দিনে প্রচুর হাঁটা উচিত অথবা জিমে যাওয়া উচিত সপ্তাহে কয়েকদিন।
জিমে গিয়ে বলিউড স্টারদের মত বডি বানাবেন না। ওয়েট ট্রেইনিং করলেও সেটা নিজেরে এক্টিভ ও ফিট রাখার জন্য। মানুষ জিমরে মনে করে রিপড বডি বানানোর উপায়, এবং কয়দিন পর তার বডি ঐরকম না হইলেই হতাশ হয়ে যায়। মনে ভাবে ওইরকম করা তো অনেক হার্ড হবে তাই বেহুদা টাইম নষ্ট করব কেন। বুঝে না ওই স্টারদের পেশাই হলো শো বিজনেস, তারা শ্যুটের আগে এক্সারসাইজ করে, পানি টানি কম খাইয়া নিজেদের তৈরি করে। তারা জিনিশটা করে পেশার জন্য। এবং সাধারণ মানুষের লক্ষ্য হবে তার নিজের চাহিদার উপর নির্ভর করে, পেশাদার অভিনেতা বা এথলেটদের উপর নির্ভর করে নয়।