মাইকেল ম্যাথিউজের বিগার লিনার স্ট্রংগার বইতে যা আছে, তা এই সাইটের অনেক লেখায় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে এসেছে। মূলকথাটি হলো, মাসল বিল্ড করতে হলে এবং স্ট্রেংথ বাড়াতে হলে আপনাকে বেশি ওয়েট উত্তোলন করতে হবে। সময় হবে কম কিন্তু এক্সারসাইজ হবে তীব্র। দ্বিতীয় কথাটি হলো পর্যাপ্ত প্রোটিন জাতীয় খাদ্য খেতে হবে। এই হলো বডি বিল্ডিং এর মূলকথা, আর একটি কথা যোগ করা যায়, সাপ্লেমেন্ট ইন্ড্রাস্ট্রির যেসব কথা আপনি শুনে থাকেন বিভিন্ন সাপ্লেমেন্ট নিয়ে এগুলি ভুয়া।
আর ফ্যাট লস করতে হলে আপনার শরীর যে পরিমাণ ক্যালরি খরচ করে তার চাইতে কম ক্যালরি খেতে হবে। এরপরে করতে হবে এক্সারসাইজ।
আপনার বডির জেনেটিকস যে ধরণের হোক না কেন, আপনি লিন মাসল ম্যাস ডেভলাপ করতে পারবেন। মনে রাখবেন আপনি যে রকম দেখতে এর ৭০-৮০% কারণ হলো আপনার খাওয়া দাওয়া। একটা কথা আছে আমরা যা খাই, সেরকমই হই।
এই ফর্মূলায় এক্সারসাইজ করতে পারেন মাসল গ্রোথের জন্যঃ
১-২/৪-৬/৯-১২/৪৫-৬০/৫-৭/৮-১০
১। প্রতিদিন ১/২ মাসল গ্রুপ ট্রেইন করবেন। সহজ ভাষায়, বাইসেপ+চেস্ট বা শোল্ডার+ট্রাইসেপ এরকম করে বা একটি মাসলগ্রুপ। একদিনে সব মাসল গ্রুপ করবেন না।
২। এক্সারসাইজের রেপস হবে ৪ থেকে ৬, খুবই ভারী ওয়েট দিয়ে।
যখন ছয়টার বেশি রেপ মারতে পারবেন তখনই ওয়েট বাড়াবেন। প্রতি রেপ ২-১-২ নিয়মে হবে। অর্থাৎ, প্রথম অংশ ২ সেকন্ড, মাঝে ১ সেকন্ড বিরতি, এবং এরপরের অংশ ২ সেকন্ড।
৩। প্রতিটি মাসল গ্রুপের জন্য ৯ থেকে ১২ টি সেট এক্সারসাইজ করবেন। অর্থাৎ, চেস্ট হলে বেঞ্চ প্রেস ৩ সেট, আপার বেঞ্চ প্রেস ৩ সেট, ডাম্বেল প্রেস বা ফ্লাই ৩ সেট এরকম করে।
৪। এক্সারসাইজ হবে ৪৫ মিনিট থেকে ৬০ মিনিট।
৫। প্রতি মাসল গ্রুপ ৫/৭ দিনে একবার করে করবেন।
৬। ৮-১০ সপ্তাহ পরে এক সপ্তাহ রেস্ট নিবেন।
ওয়ার্ম আপ সেটঃ
ওয়ার্ম আপের জন্য যে হেভি ওয়েট দিয়ে এক্সারসাইজ করেন তার অর্ধেক ওয়েট দিয়ে করবেন ১২ রেপস। এরপর এক মিনিট রেস্ট নিবেন।
আবার একই ওয়েট দিয়ে ১০ রেপ করবেন। এক মিনিট রেস্ট।
পরের সেটে যে ওয়েট দিয়ে মূল এক্সারসাইজ করেন তার ৭০% ওয়েট দিয়ে ৪ রেপ মারবেন। এক মিনিট রেস্ট।
এর পরের সেটে যে ওয়েট দিয়ে এক্সারসাইজ করেন তার ৯০% ওয়েট দিয়ে মাত্র এক রেপ মারবেন। দুই তিন মিনিট রেস্ট নিবেন মূল এক্সারসাইজ শুরুর আগে।
মাসল গেইনের জন্য ম্যাথিউ এর সূত্রঃ লিফট হেভি, লিফট হার্ড, পর্যাপ্ত রেস্ট এবং বডিকে পর্যাপ্ত খাবার দিন।
নিউট্রিশন বিষয়ক তথ্য চেকঃ
এই অংশটি বইটিতে নেই কিন্তু এখানে আমি দিচ্ছি কারণ সাপ্লেমেন্ট ইত্যাদি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন করেন। সাপ্লেমেন্টদের মধ্যে হোয়ে প্রোটিন আইজোলেট এবং ক্রিয়েটিন সবচাইতে বেশি সেইফ, এবং কার্যকরী রিসার্চ মতে। বাকি অনেক অনেক সাপ্লেমেন্ট আছে যেগুলি কাজ করে না, কিন্তু এদের বিজ্ঞাপন হয় প্রচুর। আর যেহেতু অনেক টাকার ইন্ড্রাস্ট্রি তাই রিসার্চও হয়ে থাকে বায়াসড। নিউট্রিশনের ফিলড এমনিতেই নানা স্ববিরোধী কথায় পূর্ন।
চিনি বিষয়ক একটি উদাহরণ দিলে বুঝা যেতে পারে নিউট্রিশন ইন্ড্রাস্ট্রির বিরোধপূর্ন অবস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডবিউ এইচও ২০১৪ –তে রিপোর্ট দিয়েছিল বাইরের চিনি দ্বারা মোট নেয়া এনার্জির ১০ ভাগ কেউ নিতে পারেন। সাধারণ এডাল্ট লোকের জন্য হয় তা ২৫ গ্রাম বা ৬ চামচ। ৫ ভাগ অর্থাৎ ৩ চামচ নিলে ভালো, বলে জানিয়েছে ডব্লিউ এইচ ও।
এই কারণে আমেরিকান চিনি সংস্থা ইউ এস কংগ্রেসের ল মেকারদের কাছে দাবী জানিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ডোনেশন বন্ধ করে দেবার জন্য।
সাপ্লেমেন্ট বা নিউট্রিশন বিষয়ক ফ্যাক্ট চেক করতে হলে ব্যবহার করতে পারেন এক্সামিন ডট কম ওয়েবসাইট। এখানে সার্চ দিলেই যে জিনিসটি সম্পর্কে আপনি তথ্য চাচ্ছেন সে সম্পর্কে লেখা পাবেন ও সাইন্টিফিক রিসার্চের সূত্র পাবেন।